নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে বর্নাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। আবহমান গ্রাম বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংগ্রহ সংরক্ষন পুনরুজ্জীবন ও প্রদর্শনের লক্ষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফাউন্ডেশনের লোকজ মঞ্চে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতি মন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো: খোরশেদ আলম, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি প্রমূখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতি মন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সোনারগাঁয়ের ইতিহাস বেশ গৌরবময়। সোনারগাঁয়ের প্রাচীন পানাম নগরীকে ঘিরে এখানে ব্যাপক পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বর্তমান সরকার সংস্কৃতি বান্ধব সরকার। লোক সংস্কৃতির উন্নয়নে বর্তমান সরকার যা যা করা প্রয়োজন সবই করবে।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনারগাঁয়ে যদি প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যায় তাহলে এখানে একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা যেতে পারে।
এর আগে তিনি ফাউন্ডেশন চত্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্প স্তবক অর্পণ করেন এবং লোকজীবন প্রদর্শনী ও গ্রামীণ লাঠি খেলা উপভোগ করেন।
মন্ত্রী মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উদ্বোধন করার পর তামা-কাঁসা-পিতল শিল্প শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং মনোজ্ঞ লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
এবারের উৎসবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চল থেকে ৬০ জন দক্ষ কারুশিল্পীকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে । তাদের জন্য ৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এদের মধ্যে ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের নক্শি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নক্শিকাঁথা, নক্শি হাতপাখা, মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র ও ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্প।
এছাড়াও ফাউন্ডেশনের লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, লোক ছড়া ও পুঁথি পাঠের আসরের আয়োজন থাকবে। পাশাপাশি গ্রামীন খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা ও পিঠা প্রদর্শনী করা হবে।
লোকজ উৎসব প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলবে এ উৎসব ।