গত কোরবানি’র ঈদে দেড় লক্ষ টাকা মূল্যের গরুর চামড়া সিন্ডিকেট করে ২৫০-৩০০ টাকায় কিনেছেন অনেক মুনাফার আশায়! বাড়তি মুনাফার লোভে ট্যানারির মালিকদের বেশির ভাগই সিন্ডিকেট করে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা থেকে বিরত ছিলেন। অল্প যা বিক্রি হয়েছিল তাও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক কমে, নামমাত্র মূল্যে। এতে চামড়া সংগ্রহকারীরা পড়েছিলেন বিপাকে, চামড়া পচে দুর্গন্ধে নিরুপায় হয়ে অনেকে সংগৃহীত চামড়া, নামমাত্র দরে বিক্রির চেয়ে তা ফেলা দেওয়া অধিকতর যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেছিলেন, তাই চামড়া রাস্তায় পার্শ্বে বা নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন, মাটির নিচেও পুঁতে ফেলেছিলেন অনেকে। কোরবানি পশুর চামড়া বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতেও দেখা গিয়েছিল, কোথাও মাত্র ৫০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রির ঘটনাও ঘটেছিল, আবার ন্যায্যদামে চামড়া কিনে আড়ৎদারদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন মৌসুমী ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। কোরবানির পশুর যে চামড়া দুই-আড়াই হাজার টাকা বিক্রি হতো, তা ক্রেতার ঘাটতি থাকায় দাম নির্ধারণ ছাড়াই ট্যানারি মালিক এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। কোরবানির চামড়ার এ দশা নিয়ে সাধারণ মানুষ, মৌসুমী ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও, চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার ফলে মুলত বঞ্চিত হয়েছিলো গরিব মানুষগুলো’ই কারন মাদ্রাসা’র উন্নয়ন, এতিম এবং দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনা ও খাবার খরচের একটা অংশ কোরবানির পশুর চামড়া থেকে সংগ্রহ করা হতো। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের কারনে ধারণা করা হচ্ছে এই ঈদে ৮০-৮৫% পাদুকা সহ চামড়াজাত পণ্য গোডাউনে’ই অবিক্রিত রয়ে যাবে, তাই খুব জানতে ইচ্ছে করছে কেমন বোধ করছেন সেই প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ মুনাফা খোর চক্র যাদের কারনে ‘এতিম ও গরিবের হক’ কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছিল।
পুনশ্চঃ আমার মতো হাজারো যুবকের পথ প্রদর্শক, স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকপ্রাপ্ত, পিএইচপি ফ্যামিলি’র সম্মানিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চাচাজি’র সাথে সুর মিলিয়ে আমরাও বলি “লোভের মোহে পড়ে সত্য-মিথ্যা, ভাল-মন্দ সব বিসর্জন না দিয়ে, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার অন্যায় ইচ্ছায় পাপের পথে ধাবিত হয়ে অন্যের সর্বনাশ ডেকে আনা থেকে বিরত থেকে, মানব জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করে গড়ে তোলার মানসে সব ধরনের লোভকে বর্জন করতে শিখি।”
মো. আনিসুর রহমান সোহান
ব্যবস্থাপনা পরিচালক
রহমানিয়া ফ্যামিলি।