এক রাশ বিষন্নতা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে এবারের ঈদ। বিগত প্রায় তিন মাস যাবত করোনা প্রাদুর্ভাবে জন জীবন যখন স্থবির ঠিক তখনি ঈদ এসেছে আমাদের দ্বারে। মানব সভ্যতায় এমন ঈদ এর আগে দেখেনি কেউ। করোনায় স্বাস্থ্য বিধি মানার কারণে রমজান মাসে তারাবি নামাজে মুসল্লিদের আধিক্য ছিল না এবার । শপিং মল কিংবা বিপনী বিতানেও ছিল না আগের মতো উপচে পড়া ভীড়। সড়ক মহাসড়কে ঘরে ফেরা মানুষের চাপে দীর্ঘ যানজট ছিল না। ছিল না ইফতার পার্টির প্রতিযোগিতা। ঈদে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কোন প্রস্তুতি নেই। ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়ার যে রীতি তা থেকেও বেড়িয়ে আসতে হয়েছে করোনার কারণে। ঈদের নামাজ ঈদগাহে নয় স্বাস্থ্য বিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে পড়তে হচ্ছে মসজিদে। ঈদের নামাজের পর কোলাকুলির যে বিধান তাও মানা যাচ্ছে না এবার। ঈদে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়াও হচ্ছে না করোনা সংক্রমনের জন্য। নিজ ঘরে থেকেই ঈদ পালনের নিদের্শনা দিচ্ছে সরকার। দেশে আশংকাজনক হারে প্রতিদিন বাড়ছে করোনা রোগী তার সাথে বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও। এমতাবস্থায় সার্বজনীন ভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগের কোন সুযোগ নেই। তবে এবারের বিষন্ন ঈদে আনন্দ খুজেঁ নেয়ার একটি মাধ্যম হচ্ছে অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। করোনার জন্য যারা কর্মহীন, যারা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন সাধ্যানুয়ায়ী তাদের পাশে দাড়ানোর মধ্যে লুকিয়ে আছে এবারের ঈদ আনন্দ।
প্রতি বছর এদেশের বিত্তবান ও রাজনৈতিক নেতারা তাদের প্রচার প্রসারের জন্য ইফতার পার্টি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন তাছাড়া ঈদ শুভেচ্ছা দেয়ার জন্য ব্যানার পোস্টারের ব্যয়ও কোন অংশ কম নয়। যেহেতু এবার করোনার কারণে ইফতার পার্টিগুলো হয়নি, ব্যনার পোস্টারও রাস্তা ঘাটে চোখে পড়ছে না সেহেতু তাদের কাছে মিনতি আপনারা ওই টাকাগুলো অসহায়দের কল্যানে ব্যয় করুন। এতে অসহায় মানুষগুলো যেমন কিছুটা সাহায্য পাবে আপনিও মানসিক ভাবে তৃপ্তি পাবেন। পবিত্র ঈদুল ফিতর সবার জন্যই সুখময় হোক। ঘরে থেকে নিরাপদে সবাই ঈদ পালন করুন। হয়তো করোনা ভাইরাস এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে একদিন। আমরা আবার আগের মতো ঈদ উদযাপন করবো। মিলবো প্রাণে প্রাণে। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
লেখকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক, চারদিক
সোনারগাঁ প্রতিনিধি, দৈনিক দেশ রূপান্তর