হুসাইন রবিউল
এবারের একুশের গ্রন্থ মেলায় বের হয়েছে বিশিষ্ট লেখক ও ইতিহাস গবেষক শামসুদ্দোহা চৌধুরীর গবেষনাধর্মী গ্রন্থ সোনারগাঁওয়ের ইতিহাস। ঐতিহাসিক ভাবে সোনারগাঁও একটি সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ। অথচ এতদিন এ জনপদের পূর্নাঙ্গ কোন ইতিহাস ছিল না। সে উপলব্দি থেকেই লেখক শামসুদ্দোহা চৌধুরী তাঁর কয়েক দশকের গবেষনায় রচনা করেছেন সোনারগাঁওয়ের ইতিহাস গ্রন্থটি। এ গ্রন্থে সোনারগাঁওয়ের হারিয়ে যাওয়া অলিখিত ইতিহাসকে বিভিন্ন প্রমাণ পঞ্জির আলোকে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। সোনারগাঁওয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা দিক উঠে এসেছে বইটিতে। আফসার ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৪০০টাকা।
শামসুদ্দোহা চৌধুরী বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রায় দুই শতাধিক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি তিনি সহস্রাধিক নানা স্বাদের ফিচার লিখে হয়েছেন প্রশংসিত। এ পর্যন্ত ইতিহাস, গল্প, কবিতা ও উপন্যাসসহ বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে ইতিহাস ভিত্তিক গ্রন্থ সোনারগাঁওয়ের সন্ধানে,ঈশা খাঁর সোনারগাঁও, প্রাচীন নগরী সোনারগাঁও ও সোনারগাঁওয়ের ইতিহাস।গল্প গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে হিম অমানিশার ছায়াবাজি, মোনালিসার হাসি দেখেছি, ভুতেরা বাড়ীতে নেই, প্রকাশিত কবিতা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কমান্ডো, সোনারগাঁওয়ের সোনালী হেরেম, উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে সোনারগাঁওয়ে প্রেম কস্তরির বিরহ কাল, পারু তোমায় ডেকে ছিল সোনারগাঁওয়ের নিমন্ত্রনে ও কিশোর উপন্যাস গদাদার সোনারগাঁও অভিযান।
প্রকাশতব্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে উকুন এবং উকুন বিষয়ক অবকাশ, লবনের পায়েশ, জার এবং একজন আতশ আলী ও খরকুটো।
শামসুদ্দোহা চৌধুরী এর বাইরেও বেশ কিছু মঞ্চ নাটক লিখে ও নির্দেশনা দিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডাক দিয়ে যায় অচিন পাখি, ঋণ, বৈশাখে স্মৃতির মিনার, মঞ্চের খেলা, ডেগ, সূর্য গ্রহন ও একাত্তর।
১৯৫৫সালের ১৮মার্চ সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের মোগরাপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন তিনি। কর্ম জীবনে তিনি ছিলেন ব্যংক কর্মকর্তা। বর্তমানে অবসরে আছেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি শিল্প সংস্কৃতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। মঞ্চ নাটকে অভিনয়ও করেছেন তিনি।
শামসুদ্দোহা চৌধুরী সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি ও সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সভপতি হিসেবে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য তিনি।
লেখালেখির অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০২ সালে পরিবেশ সাংবাদিকতায় (এফ.ই.জে.বি) জাতীয় পরিবেশ সাংবাদিকতায় ভূষিত হন। এছাড়া সোনারগাঁও বেনিফিট ফান্ড ও নারায়ণগঞ্জ অনন্যা শিল্পগোষ্ঠি পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি।
ব্যক্তি জীবনে তিনি এক পুত্র মিনহাজ উস সিরাজ ও মেয়ে আশরাফুল আম্বিয়া মেহনাজের জনক। স্ত্রী মানসুরা বেগম তাঁর লেখালেখিতে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে সব সময়।