নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
মেঘনা নদী থেকে সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আল্টিমেটামের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে নোটিশ করা হয়ে দখলদারদের কিন্তু কোন আল্টিমেটাম ও নোটিশে কর্নপাত করছেনা মেঘনা দখলদাররা। বরং অভিযোগ উঠেছে দখল ছারাতো দুরের কথা অনেক দখলদার নতুন করে নদী ও খাস জমি দখলে মেতে উঠেছে।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন-২০১৩-এর উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে- ‘নদীর অবৈধ দখল, পানি ও পরিবেশ দূষণ, শিল্প কারখানা কর্তৃক নদী দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নৌ পরিবহনযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজনে’ নদী কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিটির তত্ত্বাবধানে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি নদী রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে সদস্য করা হয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ নিয়ে।
২০১৩ সালে (২৯) নং আইন অনুযায়ী সোনারগাঁ উপজেলায় একটি নদী রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমাসে একটি মাসিক সভা করার কথা থাকলেও নিয়ম মোতাবেক মাত্র ৩টি সভা করে বন্ধ করে দেয় সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন। এদিকে,বাংলাদেশের যে কয়েকটি উপজেলা নদী দখল হয়েছে তার মধ্যে সোনারগাঁ উপজেলা অন্যতম। সোনারাগাঁ উপজেলাকে শিল্প এলাকা ঘোষনা করার আগেই এখানে কয়েকটি শিল্প-প্রতিষ্টান মেঘনা নদী দখল ও দূষন করার খেলায় মেতে উঠে। এসব কোম্পানীর বিরুদ্ধে যে কয়বার উচ্ছেদ চালানো হয়েছে তার প্রতিটিতে ব্যর্থ হয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে, গত ২২ জুলাই বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও সচিব ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার সরেজমিনে পরিদর্শনে মেঘনা নদী পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্যদের সাথে মত বিনিময় করেন। মত বিনিময়ে রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান জানান, মেঘনা নদী বেভাবে দখলদাররা দখল করে আছে তা ভয়াবহ। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে মেঘনা নদী বিলিন হয়ে যাবে। যেভাবে সিমেন্ট কোম্পানীগুলো নদী দখল করে আছে তাতে মনে হচ্ছে তারাই নদীর মালিক। এসব দখলদাররা যতই ক্ষমতাশীল হোক না কেন আগামী দু দিনের মধ্যে তাদের স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে নদী রক্ষা কমিশন থেকে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এনে এ অভিযান চালানো হবে। এসময় তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন আপনারা কি করেন। এগুলো প্রতিষ্ঠান নদী দখল করে নিলো আপনারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করলেন না। আগামী দু দিনের মধ্যে মেঘনা নদী দখলদারদের ২ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। তার নির্দেশ দেওয়ার একদিন পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ প্রদান করে। নোটিশ প্রদানের ৬ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও এখনো কোন প্রতিষ্টান দখল ছাড়েনি কোন প্রতিষ্ঠান। বরং দখলতো ছাড়াতো দুরের কথা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নদী দখল ও দূষনে মেতে উঠেছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ করার শর্তে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, দখলদাররা এমন ক্ষমতাশীন যে তাদের পক্ষে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব না।