নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: আগামী উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সমর্থন দিয়ে নির্বাচিত করে দিবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর এক আওয়ামীলীগ নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইফতার মাহফিলের অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ থানা বিএনপির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত দুই দিনে সোনারগাঁ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে এই খবর নেতাকর্মীরা পাওয়ার পর মান্নান পন্থি অনেক নেতা ইফতার পাটিতে যোগদান করেননি।

জানাগেছে, আগামী ২৩ মে সোনারগাঁয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে সোনারগাঁ থেকে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধি করছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর ও এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া। এবার উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি না আশায় আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সে লক্ষ্যে আওয়ামীলীগের নেতারা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন ওয়েতে তাদের সাথে গোপনে মিটিং করে যাচ্ছেন। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার জামপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা গোলজারের উদ্যোগে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। সেই ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। সেখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রায় ১৫শ লোক উপস্থিত হোন। সেই অনুষ্ঠানে তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে যোগ।দেন। অভিযোগ উঠেছে সেই ইফতার পার্টির অর্থের যোগান দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী। চাউর আছে বিএনপির সমর্থন পেতে ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর সেই ইফতার পার্টির জন্য ৮ লাখ টাকা দেন। আর আগে কাঁচপুর শ্রমিকলীগ নেতা মজিবুর রহমানের বাসায় এই  টাকার লেনদেন হয়। মান্নানের এপিএস সেলিম হোসেন দিপু ও জামপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা গোলজার সেই টাকা নেন। এই বিষয়টি মান্নান ও মোশারফ উভয় অবগত আছেন। আওয়ামীলীগের নেতাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি যখন চাউর হতে থাকে তখন অনেক বিএনপি নেতা ইফতার পার্টি বর্জন করেন এবং তারা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এসময় অনেক বিএনপি নেতারা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের অবহিত করেন।

সোনারগাঁ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ নেতা যারা বিএনপির ইফতার পার্টিতে যাননি তারা জানান, দীর্ঘদিন পর সোনারগাঁয়ে বিএনপি সকল নেতাকর্মী উৎসবমুখর পরিবেশে ইফতার মাহফিল করছি এতে খুব ভাল লাগছিল কিন্তু গতকালের ইফতার পার্টিতে যখন নেতাকর্মী নিয়ে যাবো এর একদিন আগে শুনলাম বিএনপির কিছু নেতা আওয়ামীলীগ নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন করছে এরপর থেকে আমরা জামপুরের ইফতার পার্টি বয়কট করেছি। তারা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, গত ২০টি বছর হামলা মামলার শিকার হয়ে ফেলারী জীবন যাপন করছি আওয়ামীলীগের জন্য অথচ কি দুর্ভাগ্য আজ সেই আওয়ামীলীগের নেতার টাকায় আমাদের ইফতারী করতে হয় এর চেয়ে দূর্ভাগ্য আর কি হতে পারে।

এ বিষয়ে সেলিম সেলিম হোসেন দিপু জানান, বাবু ওমরের কাছ থেকে টাকা এনে ইফতার পার্টি করছি এই তথ্য সর্ম্পন ভুল, মান্নান সাহেবের টাকা কম আছে নাকি যে বাবু ওমরের কাছ থেকে টাকা এনে ইফতার মাহফিল করতে হবে। যারা এ তথ্য দিয়েছে তারা মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে থানা বিএনপি সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীর সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল সালাম আজাদ জানান, বিষয়টা আমি অবগত নই। কেউ যদি সংগঠনের বাহিরে গিয়ে সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম করে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র মহাসচিব এডভোকেট রহুল কবির রিজভী জানান, এ বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।