নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে জাতীয়পার্টির (জাপা) মনোনয়নের জন্য স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়েছে। মনোনয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও কেন্দ্রীয় জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা অনন্যা হুসেইন মৌসুমী।
মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লিয়াকত হোসেন খোকা নারায়ণগঞ্জ-৩ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সাংসদ নির্বাচিত হলেও আসন্ন নির্বাচনে ছাড় দিতে নারাজ একই দলের প্রার্থী অনন্যা হুসেইন মৌসুমী। বিগত নির্বাচনের আগে অনন্যা হুসেইন মৌসুমী এ আসনে ঝিমিয়ে পড়া জাতীয়পার্টিকে তৃনমুল পর্যায়ে চাঙ্গা করলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হন। অপরদিকে এ আসনে আকষ্মিক ভাবে জাপার মনোনয়ন পান লিয়াকত হোসেন খোকা। এ নিয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা ও মৌসুমীর মধ্যে শুরু হয় অন্তর্দ্বন্ধ। বিগত ৫ বছরে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার কোন অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি অনন্যা হুসেইন মৌসুমীকে। তাদের দুজনের দ্বন্ধ সোনারগাঁবাসীর কাছে অনেকটা প্রকাশ্য। মৌসুমী বিভিন্ন সময়ে বর্তমান সাংসদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ও বিষোদাগার করেছেন। মৌসুমীর অভিযোগ সম্প্রতি জাতীয়পার্টির মহাসমাবেশে যোগ দিতে গেলে তার নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে এমপি খোকার লোকজন। তবে, এমপি খোকা বিষয়টি অস্বীকার করেন। বেশ কিছুদিন যাবত মৌসুমী আবারো গণসংযোগে মাঠে নেমেছেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে উঠান বৈঠক ও পথসভার বক্তব্যে বলছেন এবার মহাজোটের মনোনয়ন তিনি অবশ্যই পাবেন। বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও হাই কমান্ড এবার তাকে মনোনয়নের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরো বলছেন আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় আওয়ামীলীগের পুরোপুরি সমর্থন পাবো। কিন্তু খোকাকে মনোনয়ন দিলে তিনি একটি অংশের সমর্থন পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমি নিজেকে মহাজোটের যোগ্য প্রার্থী মনে করি। অপরদিকে লিয়াকত হোসেন খোকার দাবি তিনি বিগত ৫ বছর সোনারগাঁয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তাছাড়া তিনি জাতীয়পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন। সারা দেশে জাপার মনোনয়নের ব্যাপারে তিনিও মতামত দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে তিনি চিন্তা করছেন না। খোকা এবং মৌসুমীর এ দ্বন্ধে সুযোগ নিতে চাইছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে এ আসনে জাপার একাধিক প্রার্থী হওয়ায় এবং কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ার মানসিকতার কারণে মনোনয়নের চাকা ঘুরে যাওয়ার সম্ভবনা আছে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৯ প্রার্থীর সবাই বিভিন্ন সময়ে তাদের বক্তব্যে বলেছেন এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী নয় নৌকার প্রার্থী চাই। নেত্রী যাতে এখানে নৌকার প্রার্থী দেন সেজন্য প্রত্যেক প্রার্থী একাট্টা প্রকাশ করেছেন। এমনকি জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন সভা সমাবেশে এ আসনটি মহাজোটকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। নেত্রীর কাছে আবেদন করেছেন আসন্ন সংসদ নির্বাচনে এ আসনে যাতে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে নৌকার মনোনয়নের ব্যাপারে ৯ মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই এ আসনে লাঙ্গলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত এ আসনে আবারো আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পেতে যাচ্ছে কিনা সেটা এখন দেখার বিষয় ।