নিউজ সোনারগাঁ২৪ডডটকমঃ বুদ্ধিজীবী গণ বলে থাকেন যে বইয়ের বোঝা ও পরীক্ষার চাপে নাকি শিশুরা বিপর্যস্ত।
আসলে কোন পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বলছেন,, জানিনা।আমি খুব কাছ থেকে শিশুদের দেখি প্রতিদিন। তারা বুদ্ধিজীবীগণের মত নয়।
বয়স, সামর্থ্য বিচার করেই প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে।বর্তমান কারিকুলামে যে সকল পাঠ্য বই রয়েছে সেগুলির ব্যাপকতা ও কম।একজন প্রাথমিকের প্রশিক্ষিত শিক্ষক যদি শিশুকে বুঝে পাঠদান করেন তাহলে তেমন জটিল কিছুই নয়।অতিরিক্ত কোন সহায়ক বইয়ের দরকার নেই।প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে একটি মাত্র বই।যা শ্রেণিতে রেখেই পাঠদান করার কথা।কিন্তু সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের যন্ত্রণার জন্য বাসায় দিয়ে দিতে হয়।এর ওজন তেমন নয়।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে তিনটি মাত্র বই।৬+ ও ৭+ বয়সি শিশুর জন্য ও এসব বইয়ের ওজন তেমন নয়। তাদের জন্য ও সহায়ক বই লাগে না।শিক্ষক ই যথেষ্ট।
তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই হলো ৬ টি করে।৮+/৯+/১০+ শিক্ষার্থীর জন্য ও বহন করা কঠিন নয়।বইগুলির ব্যাপকতা খুবই কম।কোনো সহায়ক বই দরকার নেই।
এখন বাবা – মা কেন গাইড বই বা অন্যান্য বইয়ের সাহায্য নিতে চান? কেন নিজের সন্তান কে পড়ায় চাপ দিয়ে থাকেন? কে শিশুর ব্যাগের ওজন বাড়াচ্ছে? কেন বাড়াচ্ছে? মা – বাবাকে সেই অস্থিরতা থেকে বের হতে হবে।
যদি একটি শিশু নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে তাহলে তার পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই।
বাসায় মা – বাবা কিংবা অভিভাবক শুধু স্কুলের প্রতিদিনের পাঠটুকু পুনরায় দেখিয়ে দিলেই হয়।
এই যে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পাঠদান প্রক্রিয়া তা যাচাই বা মুল্যায়ন অতীব জরুরি। শ্রেণিতে বিদ্যমান সকল শিশুকে একই প্ল্যাটফরমে আনতে হলে মুল্যায়ন প্রয়োজন।
মুল্যায়ন ব্যবস্থা না থাকলে শিশুকে গঠন করা সম্ভব নয়।শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য পরীক্ষা প্রয়োজন ।মুল্যায়নের ফলে শ্রেণিতে উপস্থিতি বৃদ্ধি,ঝরে পড়া রোধ,হাতের লেখা,পড়ার দক্ষতা সহ সর্বোপরি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সহজতর হয়।
নিজের প্রাণাধিক সন্তানের গাঠনিক ও সামষ্টিক মুল্যায়ন আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে সম্ভব।
শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক।সেক্ষেত্রে উন্নত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তুলনা করতে চাই না।
অধিক শিক্ষার্থীর ক্লাসে পাঠদান করা খুবই কঠিন কাজ।
যদি ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীর ক্লাস হয়, তখন শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক মুল্যায়ন করে রিপোর্ট হালফিল রাখা সম্ভব।
আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নাই।ফলে আমরা এক ধরনের শিখন শেখানো পদ্ধতিতে অভ্যস্থ হতে হতে নতুন পদ্ধতির আবির্ভাব। ফলে ভেস্থে যায় সব আয়োজন।
অযথা বইয়ের বোঝা বলে জল ঘোলা করার দরকার নেই। পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মেধা যাচাই,লেখা যাচাই,ক্রিয়েটিভিটি যাচাই করা যায়। আর শিশু স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষায় অংশ নেবে। প্রতিদিনের ক্লাসের মত। সেক্ষেত্রে বাবা মা অস্থির হয় ও শিশুর মনে পরীক্ষা ভীতি তৈরি করে।
প্রাথমিক বিদ্যলয়ে যাদের সন্তানকে না পড়িয়ে কিন্ডারগার্টেনে পড়িয়ে থাকেন,,,,,, তারাই বলেন বইয়ের বোঝা ও পরীক্ষাভীতি।
তাই বলব আপনার শিশুর সর্বোত্তম নিরাপদ স্থান হল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।এখানে বইয়ের চাপ নেই,,,পরীক্ষার ভীতি নেই।।
মানসম্মত শিক্ষা আমাদের অংগীকার।
রেহেনা বিলকাস
প্রধান শিক্ষক, ভট্টপৃর সরকারী প্রাথমিব বিদালয়