নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সারাদেশে গণহারে টিকা দেয়া শুরু করেছে সরকার। সে নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে পাড়া-মহল্লা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের দিন মজুর থেকে শুরু করে প্রতিটি সাধারণ মানুষকে গণ টিকার দিচ্ছেন। যা সরকারের পক্ষে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে যারা টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করতে পারেন না কিংবা নিদিষ্ট জায়গায় গিয়ে টিকা নিতে পারছেন না তাদের জন্য গণহারে টিকা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কিন্তু সরকারের এ মহৎ উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ফাতেমা আক্তার। তাকে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চিলারবাগ গ্রামের গণ টিকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ১৮ বছরের উর্ধ্বে সকল নাগরিককে শুধু মাত্র আইডি কার্ড ও জম্ম নিবন্ধন প্রদর্শনের মাধ্যমে টিকা প্রদান করবেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মী ফাতেমা আক্তার আইডি কার্ড বা জম্ম নিবন্ধন নিয়ে গেলে তাকে টিকা না দিয়ে বলেন এটা দিয়ে হবে না রেজিষ্ট্রিশন কার্ড নিয়ে আসেন। নয়তো সার্টিফিকেট পাবেন না ইত্যাদি। এসব নৈতিবাচক কথা ও তালবাহানা করে অনেক মানুষকে টিকা দিতে নিরউৎসাহিত করছেন। তার এসব কথা ও টিকা না দেয়ার শক্ত অবস্থানের কারণে অনেকে টিকা না নিয়ে ফিরে গেছেন বাড়িতে। এতে টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

টিকা নিতে আসা উম্মে কুলসুম জানান, তার বয়স ১৮ উপরে। এখন সে আইডি কার্ড করেনি সে জন্য তিনি জম্ম নিবন্ধন নিয়ে এসেছেন টিকা দিতে। টিকা নিতে এসে টিকা প্রদানকারী মহিলা জানান রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে আসতে। এখন আমি রেজিস্ট্রিশন কার্ড কোথায় পাবো। সে জন্য টিকা না নিয়েই ফেরত আসি। অথচ এর আগে বাড়ী মজলিশ এলাকা থেকে আমার শাশুরী জম্ম নিবন্ধন দেখিয়ে টিকা নিয়েছেন।

টিকা নিতে আসা মমতাজ বেগম জানান, আমার বাড়ির পাশে টিকা প্রদান করে বিধায় আমি সকাল বেলাই আসি টিকা নিতে কিন্তু টিকা প্রদানকারী মহিলা আমাকে বলে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড নিয়ে আসতে। পরে আমি আমার ছেলেকে জানাই বিষয়টি। তখন আমার ছেলেকে বিষয়টি জানালে সে জানায় তার টিকার রেজিস্ট্রেশন করা আছে পরে আমি চৌরাস্তা গিয়ে রেজিষ্ট্রেশন কার্ড বের করে এনে টিকা নিয়েছি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যকর্মী ফাতেমা আক্তারকে জিঞ্জেস করলে তিনি জানান, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দিলে সাটিফিকেট পেতে দেরী হবে। সেজন্য রেজিস্ট্রিশন কার্ড লাগবে। এরপর যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় গণহারে টিকার উদ্দেশ্য কি? যারা রেজিস্ট্রিশন করতে পারে বা না পারে সকল শ্রেনীর সর্বসাধারণকে শুধু মাত্র আইডি কার্ড ও জম্ম নিবন্ধন দিয়ে দেখিয়ে টিকার জন্যইতো গনহারে টিকার ব্যবস্থা করেছে সরকার তাহলে আপনি রেজিষ্ট্রেশন কার্ডেও কথা বলছেন কেন। তখন তিনি বলেন আজ সময় নেই আপনার দরকার হলে আগামী সপ্তাহে ইছাপাড়া গ্রামে আপনার লোক নিয়ে যাইয়েন টিকা দিয়ে দিবো নে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার টিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মতিন জানান, আইডি কার্ড ও জম্ম নিবন্ধন দিয়েই ১৮ বছরের উপরের সকল নাগরিক টিকা দিতে পারবে। ফাতেমা কেন দেননি কাল অফিসে আসলে আমি জিজ্ঞেস করবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জানান, স্বাস্থ্য কর্মী আইডি কার্ড বা জম্ম নিবন্ধন দেখানোর পরও টিকা না দেয়া দু:খ জনক। এটা তিনি ঠিক করেননি। সরকার যে উদ্দেশ্যে গণটিকার ব্যবস্থা করেছেন সেটা তিনি অবহেলা করেছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন প্রবীর আওয়ামীলীগ নেতা জানান, কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন যারা সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকারের মহান কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। সরকারের উচিত এসব চাকরীজীবিদের ধরে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা।