নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশের ন্যায় বুধবার প্রথম প্রহরে সোনারগাঁয়েও মহান বিজয় দিবস পালন করে প্রশাসন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও শ্রেনী পেশার মানুষ। দিবসটি উপলক্ষে পৌরসভার চিলারবাগ এলাকায় শহীদ মজনু পার্কে নির্মিত শহীদ বুদ্ধিজীবি বিজয় স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান তারা। এরই  ধারাবাহিকতায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিজয় স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সোনারগাঁ থানা বিএনপ ‘র নেতাকর্মী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। থানা বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে থানা ছাত্রদলের পক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজিবসহ উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা নিবেদনে দেখা যায় খাইরুল ইসলাম সজিবসহ তার নেতাকর্মীরা জুতা পায়ে স্তম্ভে উঠে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর পর সে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় খাইরুল ইসলাম সজিব ও তার নেতাকর্মীরা জুতা পায়ে বেঁধিতে উঠে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর ছাত্রদল নেতাদের এহেন কর্মকান্ডে হতভাগ হয়ে যান মুক্তিযোদ্ধারা ও সোনারগাঁবাসী। বিএনপি দেশের একটি শীর্ষ স্থাণীয় রাজনৈতিক দল। সে দলের ছাত্রদল নেতারা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে জুতো পায়ে বেঁধিতে উঠে শ্রদ্ধা নিবেদন এটি কি শ্রদ্ধা নাকি শহীদ বুদ্ধিজীবিদের অপমান সেটা নিয়ে সমালোচনা ঝড় বইছে পুরো সোনারগাঁয়ে।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজিব নিউজ সোনারগাঁ’ কে জানান, তারা জুতো পায়ে বেঁধিতে উঠেনি। বেঁধির সবগুলো সিড়ি সাদা ছিল সেজন্য তারা কোনটা উপরে আর কোনটা নিচে সেটা খেয়াল করতে পারেনি। সে জন্য ছবি তোলার সময় একটি সিঁড়ি উপড়ে উঠে গিয়ে ছিলেন। কিন্তু ফুল দেয়ার সময় তারা জুতো খুলেই উপরে উঠে ছিলেন।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি জানান, থানা বিএনপির নেতারা মহান বিজয় দিবসে বিজয়স্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সেজন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সাদুবাদ জানাই। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো বিএনপি যদি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতো তাহলে দেশের এতো বড় একটি রাজনৈতিক দলের জেলা ছাত্রদল নেতারা জুতো পায়ে কখনো বিজয়স্তম্ভের বেঁধিতে উঠতে পারতো না। ছাত্রদল নেতাদের এমন কর্মকান্ডে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমি মনে করি এজন্য ছাত্রদল নেতাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সোনারগাঁয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল এবং সোনারগাঁবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর ইসলাম জানান, জুতা পায়ে বেঁধিতে উঠা সর্ম্পূন নিষেধ ও এটি বুদ্ধিজীবি ও দেশবাসীর জন্য অপমান জনক। যারা এ কাজটি করেছে তারা অন্যায় করেছে। এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সে বিষয়টি পুলিশ দেখবে। জুতো পায়ে যাতে কেউ বেঁধিতে উঠতে না পারে বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আসলে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যাপারটি থাকে উম্মুক্ত। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের কিছু করার নেই।