বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ বন্দরের নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ডের কবরস্থান রোড এলাকায় অবস্থিত বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও তার আশপাশের সরকারি সম্পত্তি নিয়ে চাঁন মিয়া ওরফে ‘টাওয়ার চাঁন’ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রদীপের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও দখলবাজির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী—
দীর্ঘদিনের ‘একক আধিপত্য’
- ওয়াকফা না করা সত্ত্বেও সভাপতির পদ প্রায় দুই দশক ধরে নিজের দখলে রেখেছেন চাঁন মিয়া।
- লাশঘর ভাড়া বাবদ প্রতি লাশে ৭০ হাজার টাকা وصول হলেও ৫০ হাজারই নেন সভাপতি; বাকি ২০ হাজার যায় তার ঘনিষ্ঠ কবিরের কাছে।
- কবরস্থানসংলগ্ন সড়ক নির্মাণের নামে প্রতি ঘর থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ব্যবহৃত হয় চাঁন মিয়ার ব্যক্তিগত প্লটের রাস্তা তৈরিতে।
সরকারি জমি ও দোকান ভাড়া
- মদনগঞ্জ‑মদনপুর মহাসড়কের পাশে জাকির শাহ দরবার এলাকায় সরকারি পুকুর ও আশপাশের জমি জাল দলিল দেখিয়ে দখল করেন প্রদীপ।
- সেখানে গড়ে তোলা ‘কাঠপট্টি’ বাজারের ৩০‑৪০টি দোকান থেকে মাসে দুই‑তিন লাখ টাকা ভাড়া আদায় করা হয় বলে অভিযোগ।
- সহযোগী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় দুলাল প্রধান।
রাজনৈতিক আশ্রয়‑প্রশ্রয়
- ৫ আগস্টের পর ‘বিএনপি নেতা’ সেলিম বাঙালীর ছত্রছায়ায় চাঁন মিয়া কৌশলে প্রভাব বৃদ্ধি করেন।
- অতীতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থেকে বারবার দল বদল করে সুবিধা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
- এলাকাবাসীর দাবি— প্রশাসন ও দুদকের সুক্ষ্ম তদন্তে বেরিয়ে আসবে একটি বহুমুখী দখল‑দুর্নীতির চক্রের চিত্র।
স্থানীয়দের দাবি
- মসজিদের সম্পত্তি অবিলম্বে ওয়াকফা ঘোষণা ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন।
- সরকারি পুকুর‑জমি দখলের অভিযোগে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা ও দোষীদের গ্রেফতার।
- লাশঘর ও দোকানভাড়া‑সহ সব আয়ের স্বচ্ছ হিসাব প্রকাশ।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, বন্দর থানা পুলিশের সাম্প্রতিক ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এ নানা অপরাধী ধরপাকড় হলেও চাঁন মিয়া‑প্রদীপ জুটি এখনো ধরা‑ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ না হলে এলাকায় সহিংসতা ও ধর্মীয় অশান্তি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
এক নজরে অভিযোগসূচি
• ২০ বছর ধরে মসজিদ কমিটিতে স্বৈরাচারী দখল
• লাশঘর ভাড়া নিয়ে কোটি টাকার দুর্নীতি
• সরকারি পুকুর‑জমিতে অবৈধ ‘কাঠপট্টি’ বাজার
• রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাব‑ব্যবসা ও দখল
• ওয়াকফা না হওয়ায় মসজিদের আইনি নিরাপত্তাহীনতা
সচেতন মহল মনে করছে, মসজিদের মতো পবিত্র স্থানের স্বার্থরক্ষায় এখনই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে দখল‑দুর্নীতি বন্ধ হবে না, বরং এলাকাবাসীর আস্থা ও ধর্মীয় শান্তি আরও হুমকির মুখে পড়বে।