দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের তীব্রতা কমেনি। তাপপ্রবাহ কমার কোনো সম্ভাবনার কথা জানাতে পারেনি আবহাওয়া দফতর। চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে আজ রোববার স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা খুলছে। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় আছেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলেও গরমের পরিস্থিতি বুঝে আবারও বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। শনিবার বিকালে তিনি সময়ের আলোকে বলেন, প্রাথমিকে ছোট ছোট বাচ্চারা পড়াশোনা করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যায়। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ রাখলে শিশুরা লার্নিং লস (শিখন ঘাটতি) পূরণ করতে পারবে না।
বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রাথমিক স্তরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৯১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এগুলোতে মোট শিক্ষার্থী ২ কোটি ১ লাখের বেশি। এর মধ্যে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি।
শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, দেশের ৮১ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাকা দালান রয়েছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়গুলো টিনসেড বা আধা পাকা ঘর। এসব বিদ্যালয়ের অবকাঠামো আগামী এক বছরের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রা কমে আসছে। ঢাকায় গরম বেশি। ঢাকার বাইরে শরীর জ্বালা করা গরম ভাব নেই।
তিনি বলেন, চার পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণির সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে দুর্বল সেই বিষয়ের ক্লাস নেবে। ইংরেজি কিংবা গণিত বিষয়ের ক্লাস নেবে। আমরা শ্রেণি কার্যক্রম নির্ধারণে স্থানীয় বিষয় বিবেচনা করতে বলেছি। তিনি বলেন, আমরা চলতি সপ্তাহ দেখব। যদি তাপপ্রবাহ চলমান থাকে তবে আবারও বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এক শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই শিফটে বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা সকাল পৌনে ১০টা থেকে থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো করে শ্রেণি কার্যক্রম নির্ধারণ করতে পারবে।
দেশজুড়ে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ চলছে। তাপপ্রবাহের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর আগে পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ বেশ কয়েকটি ছুটির সমন্বয়ে টানা ২৬ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।