সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় আগেই বাজারে আসে। এ কারণে এর চাহিদাও বেশি, ফলে চাষিরা ভালো মুনাফা পান। শুরু থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বাগানের প্রতিটি গাছেই চলে নিবিড় পরিচর্যা।
বর্তমানে সোনারগাঁয়ে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি—এই পাঁচ প্রজাতির লিচু চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে কদমী জাতের লিচু সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক চাষি অন্যান্য ফসল বাদ দিয়ে এখন পুরোপুরি লিচু চাষে ঝুঁকছেন।
প্রতি বছর একটি লিচু বাগান ৪-৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। ফাঁকা জায়গা পেলেই চাষিরা নতুন কদমী লিচুর বাগান গড়ে তুলছেন। চলতি বছর খরায় কিছু মুকুল নষ্ট হলেও সামগ্রিকভাবে ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
সোনারগাঁ উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৫০০টির মতো ছোট-বড় লিচুর বাগান রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই কদমী জাতের লিচু। বর্তমানে কদমী লিচু প্রতি শত (১০০) বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং পাতি লিচু ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভা, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচুর বাগান রয়েছে। বিশেষ করে পৌরসভার সর্দার বাড়ী, পানাম, অর্জুন্দি, সাহাপুর, দত্তপাড়া, কৃষ্ণপুরা, ভট্টপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় উৎকৃষ্ট মানের লিচু উৎপাদন হয়।
গামতলী গ্রামের লিচু চাষি তাইজুল ইসলাম জানান, “খরায় কিছু ক্ষতি হলেও এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। গত বছর যে বাগান ২.৫ লাখে বিক্রি হয়েছিল, এবার সেটা ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি।”
সাহাপুর এলাকার লিচু ব্যবসায়ী মশিউর রহমান, বাদশা ও মাসুদ বলেন, “আমরা ফলন না দেখেই বাগান কিনে ফেলি। ভাগ্যের উপর ভর করেই লিচু ব্যবসা করি। তবে সোনারগাঁয়ের লিচুর দাম সবসময়ই ভালো থাকে।”
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা জানান, “সোনারগাঁয়ের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য অনুকূল। যদিও খরার কারণে কিছু গুটি ঝরে গেছে, তবুও এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। চাষিরাও সন্তুষ্ট।”