নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলায় জাহিদ ও মেহেদী নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইয়ের শিকার এলাকাবাসীর ক্ষোভ
স্থানীয়দের অভিযোগ, দমদমা গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন জিকুর দুই ছেলে—সোনারগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ভিপি দাবিদার জাহিদ ও তার ছোট ভাই মেহেদী হাসান দীর্ঘদিন ধরে মোগরাপাড়া ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই করছিল। তাদের বাহিনীর সহায়তায় দমদমা-কালাদরগা রোড, দমদমা ব্রিজ, বড় সাদীপুর, ষোলপাড়া আমতলা, লেবুছড়া, কাবিলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় পথচারী ও ভাড়াটিয়াদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট করা হতো।
ভুক্তভোগীদের দাবি, প্রতিদিন গড়ে ৫-১০টি ছিনতাই হলেও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া হওয়ায় থানায় অভিযোগ করার সাহস পাননি। ফলে এলাকায় ভাড়াটিয়ারা কমে যাচ্ছে, যা বাড়িওয়ালাদের জন্যও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছিনতাইয়ের পর উত্তেজনার সূত্রপাত
শুক্রবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে ষোলপাড়া আমতলা এলাকায় আরশাদ স্বর্ণকারের ভাড়াটিয়া শাহিনের এক আত্মীয় ছিনতাইয়ের শিকার হন। তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। শাহিন বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্তদের বাবা জাকির হোসেনের কাছে বিচার চাইলে উল্টো তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
এরপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মসজিদের মাইকে ডাকাতির ঘোষণা দিলে দমদমা, কালাদরগা, দলদার, বড় সাদীপুর, বিশেষখানা, ষোলপাড়া আমতলা, লেবুছড়াসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় দেড় সহস্রাধিক মানুষ জাহিদ ও মেহেদীর বাড়ির দিকে এগিয়ে যান। এ সময় জাহিদের এক আত্মীয় ধারালো অস্ত্র হাতে এলাকাবাসীর দিকে তেড়ে এলে উত্তেজিত জনতা তাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাড়িতেও হামলা
জাহিদ ও মেহেদীর ছিনতাই কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগে জাকিরের বড় ভাই ও দমদমা গ্রাম প্রধান সৈয়দ হোসেনের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা জাকির হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় মুরুব্বিরা নারীদের নিরাপত্তার কথা বলে তাদের নিবৃত্ত করেন।
পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ
ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জাহিদ ও মেহেদীকে খুঁজতে অভিযান চালিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে।