নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
* কর্মীদের ক্ষোভ নেতাদের ওপর•
* নেতারা প্রকাশ করছেন অসহায়ত্ব•
* জেলে ও দেশের বাইরে অধিকাংশ নেতা
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। মাত্র সাত মাস আগেও যে দলটির নেতা-কর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতেন, আজ তারা ছন্নছাড়া, অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশ কারাগারে, অন্যরা রয়েছেন দেশের বাইরে। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ঈদগাহে যাওয়ার কথাও ভাবতে পারছেন না, এমন মানবেতর পরিস্থিতির মুখোমুখি তারা আগে কখনো হননি।
‘স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবার মানবেতর ঈদ’
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, ‘১৯৭১ সালের পর এবার প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশে মানবেতর ঈদ কাটাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরিবার ও স্বজনদের ছেড়ে থাকতে হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, শেখ হাসিনা আপা যেদিন দেশে ফিরবেন, সেদিনই আমরা ঈদ উদযাপন করবো।’
পৌরসভা যুবলীগের এক নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের দু:খ প্রকাশ করতে না পেরে প্রোফাইল ছবি কালো করে রেখেছেন।
সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ওবায়দুল্লাহ বাদল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘৫ আগস্টের পর বড় ভাইকে হারানোর কষ্ট আজও বয়ে বেড়াচ্ছি। পরিবারের একমাত্র সন্তান হিসেবে এবার ঈদ করতে পারছি না, যা অসহনীয়।’
‘কষ্টের সমুদ্র পার করছি’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেশের মাটিতে অবাধ বিচরণ বন্ধ করেছিল। আজ ২০২৪ সালে এসে আমরা আবার সেই পরিস্থিতির শিকার। লাখ লাখ নেতা-কর্মী মামলা, হামলা, জীবননাশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের হাত থেকে দেশ রক্ষা করতে পারলেই আওয়ামী লীগের জন্য আবার ঈদ ফিরে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজীবন দল করেছি, মানুষের উপকার করেছি, কারও ক্ষতি করিনি। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর চাকরির সুপারিশ করেছি, কারও মুক্তির জন্য আইনি সহায়তা দিয়েছি। তবুও শেষ বয়সে এসে জেল খাটতে হলো! ছেলে-মেয়েদের ছেড়ে বুড়োবুড়ি একা ঈদ করছি—এটা কি ঈদ? এটা কষ্টের সমুদ্র।’
নেতা-কর্মীদের উদ্বেগ ও শঙ্কা
আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলছেন, নেতাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, খোঁজ-খবরও নেওয়া হচ্ছে না। আবার শীর্ষ নেতারাও বলছেন, সবার অবস্থা একই—কে কাকে খুঁজবে?
ঈদের আনন্দ ফিকে হয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের একটাই প্রত্যাশা—দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার দেশে ফেরা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসা।