সরকার পরিবর্তনের পর ভাঙচুর, এখন চলছে ভাড়া ব্যবসা
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁ: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবস্থিত সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আজ কাঁচাবাজারের দোকানে পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর দুর্বৃত্তদের হামলায় কার্যালয়টি ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়। এরপর কিছুদিন পরিত্যক্ত থাকার সুযোগে দখলদাররা কার্যালয়টি ভাড়া দিয়ে কাঁচা বাজারের দোকান বসিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসনাত ব্যক্তিগতভাবে জায়গাটি ক্রয় করে একটি টিনশেড দলীয় কার্যালয় গড়ে তুলেছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে এটি দুইতলা পাকা ভবনে রূপান্তরিত হয়। বহু বছর ধরে এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছিল।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়টি দখল করে সেখানে কাঁচাবাজার বসিয়ে দেন। দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একসময় রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ছিল যে কার্যালয়টি, এখন তা পরিণত হয়েছে একটি ধ্বংসস্তূপে। দরজা-জানালাবিহীন ভবনটির সামনে রয়েছে সবজি ও ফলের দোকান। ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সবজি ও ফলের ঝুড়ি। বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই এটি কোনো রাজনৈতিক কার্যালয় ছিল। পুরো পরিবেশ যেন একটি সাধারণ কাঁচামালের আড়ৎ।
কার্যালয়ের সামনে বসা একাধিক দোকানদার জানান, “অফিসটি অনেকদিন খালি পড়ে ছিল। আমরা দখলদারদের কাছ থেকে দৈনিক ভাড়ায় জায়গা নিয়ে দোকান সাজিয়েছি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “দেশের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, দলীয় অফিস তো দূরের কথা, নিজের বাড়িতে বসবাস করাও এখন নিরাপদ নয়। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে শেষ করে দিয়েছে। এখন জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আলহামদুলিল্লাহ, এখনো বেঁচে আছি।
এক সময়ের প্রাণবন্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আজ দখলদারিত্ব ও অবহেলার করুণ চিত্র বহন করছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার এ দৃশ্য সাধারণ মানুষের মাঝেও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।