নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের নদীবেষ্টিত চর কিশোরগঞ্জ গ্রামে সংঘবদ্ধ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার (৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৫০-৬০ জনের একটি সশস্ত্র দল হঠাৎ করে সোহেল, মুকুল, শামিম আহমদ স্বপন ও প্রয়াত ইউপি সদস্য ও প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা নাসির মেম্বার এর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং মূল্যবান মালামাল লুটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চর হোগলা গ্রামের আব্দুল মোতালেব ও তার ছেলে শাহাদাত, নাহিদ, মহিন, জসিম, সাইফুল, পলাশ, জয়, শামীম ও সেলিম মধ্যচর হোগলার ফারুক, বাবু গাজী, মাসুদ, শহীদ, রহমত উল্লা ও সাব্বির, চর কিশোরগঞ্জ: রিমন ও আসাদুল্লা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একের পর এক চারটি বাড়িতে হামলা করে।
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মফিজুর রহমান জানান, “সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।” রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
উল্লেখ্য, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিন এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতে হাত ধরে নাছির মেম্বার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর সেখানে তিনি এক নেতার এক রাজত্ব কায়েম করেন। তিনি সেখানে যা বলতেন তাই আইন হিসেবে বিবেচিত হতো। তার কথার বাহিরে গেলেই চলতো নির্যাতন। সেই সময় নাছির মেম্বার তার রাজত্ব কায়েম করতে গিয়ে হামলা থেকে শুরু করে খুন করতেও দ্বিধাবোধ করতেন না। তার কারণে বহু লোক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। নদীর বালু লুট থেকে শুরু করে নদীতে নৌচাদা বাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাকে সাহায্য করতে মোগরাপাড়া কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতা। যারা তার কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পেতেন। অপরদিকে, যে কোন নির্বাচন থেকে শুরু করে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করতেন নাছির মেম্বার। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে রাসেল হাড় ধরেন সেখানকার। বাবার মতো সেও ছিলেন এক দেশের এক রাজা। তার ছিল নাছির মেম্বারের মতো বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। সেই বাহিনীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতো চর কিশোরগঞ্জ ও চরহোগড়া। সে কোন নির্বাচনে তারা যাকে সমর্থন দিতেন সে প্রার্থী শতকরা ১০০ থেকে ১০০ ভোট পেতেন। কেন্দ্র দখল করে তারা দুইটি কেন্দ্রের ভোট একাই ছিল মারতেন। গত ৫ তারিখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেন নাসির মেম্বারের ছেলে রাসেল তার সহযোগিতা।