ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কের নতুন যাত্রা অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তি (পিসিএ) সম্পন্ন করতে দুইপক্ষের মধ্যে খুব দ্রুত আলোচনা শুরু হবে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস বিদেশি বন্ধু ও বাংলাদেশ কম্যুনিটির অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী সের্কেল রয়্যাল গেলুয়া সেন্টারেমহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ এর অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল এ্যাকশন সার্ভিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এশিয়া ও প্যাসিফিক) নিকলাস কাভার্নস্টর্ম এমন মন্তব্য করেন।
ব্রাসেল থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। এছাড়া গেস্ট অব অনার হিসেবে বেলজিয়াম সরকারের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলী) রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যানসহ সংশ্লিস্ট অনেকেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
গেস্ট অব অনার হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল এ্যাকশন সার্ভিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এশিয়া ও প্যাসিফিক) নিকলাস কাভার্নস্টর্ম অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, ন্যায়বিচার, সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে, যা বিদ্যমান অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ককে আরো মজবুত করে চলেছে। তিনি শীগ্রই বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে ইইউ-এর আগ্রহের কথা জানান।
বেলজিয়াম সরকারের পক্ষে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে বাংলাদেশ ও বেলজিয়াম ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী দিনে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নতুন রূপ পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ সকলকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে এশিয়া এবং এর বাইরেও দ্রুততম বর্ধনশীল একটি অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন যে, বাংলাদেশ ইইউ-এর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে যাতে বিশ্বে কোথাও মানুষকে যুদ্ধের ভয়াবহতা সহ্য করতে না হয়, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় এবং বিশ্বজুড়ে মানবতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা যায়।
অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার ও বন্ধুদের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং এক্ষেত্রে বেলজিয়াম এবং ইইউ -এর সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ককে পরিণত ও টেকসই হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতার বাইরেও জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা, সুনীল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য শক্তি, সংযোগ (কানেকটিভিটি), অভিবাসন এবং ট্যালেন্ট পার্টনারশীপসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত হচ্ছে।